কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া তখন কার্যত মুসলিম লীগের “বৃহৎ বাংলা” পরিকল্পনার সঙ্গেই সুর মিলিয়েছিল
১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট, যেদিন নিখিল ভারত মুসলিম লীগ পাকিস্তানের দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করতে “ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে” ঘোষণা করেছিল, সেদিন থেকেই কলকাতা ইতিহাসের এক ভয়াবহ অধ্যায়ের সাক্ষী হয়। শহরে প্রায় ষাট লক্ষ মানুষের ভিড়ে মাত্র বারোশো পুলিশ, যার মধ্যে মুসলমান পুলিশ অফিসারদের প্রভাব প্রবল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সুরাবর্দির প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা এবং মুসলিম লীগ কর্মীদের প্রত্যক্ষ মদতে রক্তের হোলি শুরু হয়। সেদিন সকালে হিন্দুরা বুঝতেই পারেনি কী ঘটতে যাচ্ছে। অনেকে বিকেলে গিয়েছিলেন ময়দানে মুসলিম লীগ ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির যৌথ জনসভা শুনতে, যেখানে সুরাবর্দির পাশে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেছিলেন জ্যোতি বসুও। মুসলিম লীগ সেদিন স্পষ্ট করে দিয়েছিল, পাকিস্তান গঠনের দাবিতে তারা আর কোনো আপস করবে না।
জ্যোতি বসুর রাজনৈতিক উত্থানের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল আসামে রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন। সেখানে তিনি জয়লাভ করেছিলেন মুসলিম লীগের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়। এই ঘটনাই স্পষ্ট করে দেয়, সেই সময় কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া কেবল মুসলিম লীগের পাশে দাঁড়িয়েছিল তাই নয়, বরং নিজেদের মানুষও সরাসরি লীগে দিয়েছিল।
সেই সময় কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের মধ্যে সাজ্জাদ জহির, আবদুল্লাহ মালিক এবং দানিয়াল লতিফি সক্রিয়ভাবে মুসলিম লীগের কাজে যুক্ত হয়েছিলেন। বিশেষ করে দানিয়াল লতিফি ছিলেন জিন্নাহর নিজস্ব ছাত্র; তিনি আইনশাস্ত্রে জিন্নাহর কাছ থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। পরে তিনিই ১৯৪৫-৪৬ সালের নির্বাচনে পাঞ্জাব মুসলিম লীগের ইশতেহার রচনা করেন। এই ইশতেহারকে ইতিহাসবিদরা আঞ্চলিক রাজনীতির অন্যতম অগ্রগামী ইশতেহার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
অর্থাৎ, ১৯৪০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতের রাজনীতিতে মুসলিম লীগ ও কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে কৌশলগত এক ধরনের বোঝাপড়া গড়ে উঠেছিল। মুসলিম লীগের সাম্প্রদায়িক এজেন্ডাকে তারা প্রগতিশীল মোড়কে উপস্থাপন করতে চেয়েছিল, আর এর ফলে বাংলার মতো জায়গায় হিন্দু সমাজ আরও বিপন্ন অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল।
সেই সময় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় স্পষ্টভাবে বাংলাভাগের দাবি তোলেন, কারণ তাঁর মতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ শাসনের অধীনে হিন্দুদের নিরাপত্তা কোনোভাবেই নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। মুসলিম লীগ ১৯৩৫ সালের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে বাংলার ক্ষমতায় আসছিল এবং সেই শক্তি নিয়েই তারা পাকিস্তান গঠনের জন্য সরাসরি আন্দোলনে নামে। অন্যদিকে কংগ্রেসে তখন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ছিলেন অন্যতম প্রধান নেতা। তাঁর জন্ম হয়েছিল মক্কায়, আসল নাম ছিল ফিরোজ বকত্। পরবর্তী সময়ে গুলাম মহিউদ্দিন ওয়াহাবের প্রচারক হয়ে ভারতে আসেন। বিশেষ শিক্ষালাভ না করলেও ধর্মীয় প্রচার আর রাজনীতির মাধ্যমে তিনি উঠে আসেন। আবুল কালাম, লীগ এবং কমিউনিস্ট পার্টি উভয়ের সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রাখতেন, মুসলিম অনুঘটক হিসেবে কাজ করতেন।
কলকাতার রাস্তায় তখন শুরু হয় হিন্দুদের উপর অপ্রস্তুত হত্যাযজ্ঞ। উত্তর কলকাতার হিন্দু ব্যবসায়ীদের দোকান জোর করে বন্ধ করানো হয়, হিন্দু মালিকানাধীন কারখানায় হামলা চলে, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সরকারি হিসেব বলছে চার হাজারের মতো হিন্দু নিহত হয়েছিলেন, আহত হয়েছিলেন এক লক্ষেরও বেশি। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আসল সংখ্যা অনেক বেশি, চার দিনে প্রায় দশ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। প্রশাসন প্রথম দিকে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি; সেনা আনা হয় মূলত ইউরোপীয়দের নিরাপত্তার জন্য, হিন্দুদের রক্ষায় নয়। সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটে ১৬ তারিখ মধ্যরাত থেকে ১৭ তারিখ সকাল সাতটার মধ্যে। উত্তর কলকাতার রাস্তাগুলো তখন ইটপাটকেল ও রক্তে ঢেকে গিয়েছিল, সংকীর্ণ গলিঘুঁজিতে ঘটে হত্যা, কুপিয়ে খুন, এবং নৃশংস রক্তপাত।
১৯৪৬ সালের ১৬ অগাস্টের “ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে”-তে যখন কলকাতা জ্বলছিল, প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছিল আর হাজার হাজার হিন্দু অসহায় অবস্থায় পড়েছিল, তখনই সামনে এসে দাঁড়ান গোপালচন্দ্র মুখোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন বাঙালি ভাষাভাষী এক ব্রাহ্মণ, যাঁর পরিবার বৌবাজারে মাংসের দোকান চালাত। সেই ভয়ংকর সময়ে তিনি শুধু সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেননি, হিন্দুদের সংগঠিত করার এক অভিনব কৌশলও নিয়েছিলেন—হিন্দু পুরুষদের দাড়ি কামিয়ে তাদের আলাদা করে চিহ্নিত করা। এতে বাঙালি হিন্দুরা সহজে নিজেদের মধ্যে ভেদরেখা টানতে পেরেছিলেন উর্দুভাষী মুসলমানদের বিরুদ্ধে, যাদের বড় অংশ এসেছিল বর্তমান বিহার অঞ্চল থেকে। ফলে বাংলাভাষী হিন্দু সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।
১৯১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া গোপাল ছিলেন সাধারণ পরিবারের ছেলে, কিন্তু তাঁর মধ্যে ছিল বিপ্লবী রক্ত। অনেকেই মনে করেন তিনি অনুশীলন সমিতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দাঙ্গার দিনগুলিতে তিনি যুবকদের সংগঠিত করে এক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলেন, যার নাম দেন ভারতীয় জাতীয় বাহিনী। তাঁর দলে তখন আটশো ছেলে সক্রিয় ছিল। আরেকটি তথ্য হলো—তৎকালীন কলকাতা পুলিশ নাকি আশ্বাস দিয়েছিল যে অনুশীলন সমিতির যেসব বিপ্লবী সদস্যদের গ্রেপ্তার করে জেলে রাখা হয়েছে, তাদের ধীরে ধীরে “ব্রেনওয়াশ” করে কমিউনিস্টে রূপান্তরিত করা হবে।
গোপালের নির্দেশ ছিল কঠোর—কোনো নারীকে, এমনকি মুসলমান নারীকে স্পর্শ করা যাবে না, লুটপাট চলবে না। তিনি বলেছিলেন, রাবণকেও ধ্বংস হতে হয়েছিল সীতাকে অপহরণ করার জন্য, তাই নারী অপমানের কোনো জায়গা নেই। তাঁর নেতৃত্বে হিন্দুরা সংগঠিত প্রতিরোধ গড়ে তোলে, বল্লম, অ্যাসিড বোমা, তলোয়ার—যা কিছু হাতে পেয়েছে, তা দিয়েই প্রতিরোধ করেছে। শিখ সম্প্রদায়ও তখন তাঁর পাশে দাঁড়ায়। যদি তিনি আর তাঁর দলবল না থাকতেন, তাহলে বৌবাজার, প্রেমচাঁদ বড়াল স্ট্রিট আর আশপাশের হিন্দু অধ্যুষিত অঞ্চল হয়তো মুছে যেত।
সুরাবর্দির (১৮৯২-১৯৬৩) মদতে সশস্ত্র মুসলিম দাঙ্গাকারীরা যখন শহর দাপাচ্ছিল, তখন ধীরে ধীরে গোপালের বাহিনী পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ১৮ আগস্ট থেকে তিনি কার্যত হিন্দু প্রতিরোধের নেতৃত্ব নেন, আশ্রয় দেন গৃহহারা মানুষদের, বিধবাদের নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে দেন। ২০ আগস্টের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যায় মুসলিম লীগের পরিকল্পনা ব্যর্থ হচ্ছে, কলকাতাকে পাকিস্তানের অংশ বানানো সম্ভব নয়। তখন মুসলিম লীগ নিজেই গোপালের কাছে শান্তির আবেদন করে। তিনি শর্ত দেন—প্রথমে মুসলিম লীগ তাদের দাঙ্গাবাজদের নিরস্ত্র করবে এবং হিন্দু হত্যাকাণ্ড বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেবে।
এরপরও অনেকে, বিশেষত মহাত্মা গান্ধী, গোপালকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানান। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এই অস্ত্র দিয়েই তিনি তাঁর এলাকার নারী ও শিশুদের রক্ষা করেছেন, তাই এগুলো কখনো হস্তান্তর করবেন না। তাঁর চোখে গান্ধীর অহিংসা ছিল ভণ্ডামি, যা হিন্দুদের প্রাণের বিনিময়ে মুসলিমদের তুষ্ট করার রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়।
গোপালের রাজনৈতিক কোনো পৃষ্ঠপোষকতা ছিল না, তিনি হিন্দু মহাসভার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন না। তবে কংগ্রেস নেতা ড. বিধানচন্দ্র রায়ের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। ইতিহাস বলছে, তাঁর নেতৃত্ব আর সাহসিকতার জন্যই অসংখ্য হিন্দুর প্রাণ রক্ষা পেয়েছিল, নইলে কলকাতার পরিস্থিতি অন্যদিকে গড়াতে পারত।
এই হিংসার শেকড় অবশ্য অনেক গভীরে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় থেকেই হিন্দু-মুসলিম বিভেদের রাজনীতি শুরু হয়। ঢাকাতেই ১৯০৬ সালে জন্ম নেয় অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ, যার ঘোষিত লক্ষ্য ছিল উপমহাদেশে মুসলমানদের রাজনৈতিক স্বার্থ সুরক্ষিত করা। ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগের জন্ম, ১৯৩০ সালে মুহাম্মদ ইকবালের প্রস্তাব, আর ১৯৩৩ সালে চৌধুরী রহমান আলির “পাকিস্তান” নামকরণ—এসবই পাকিস্তান সৃষ্টির বীজ বপন করেছিল। বাংলায় তখন মুসলিম ছিল ৫৫ শতাংশ, হিন্দু ৪৫ শতাংশ। জিন্নাহর স্বপ্ন ছিল অবিভক্ত বাংলা পাকিস্তানের অংশ হোক। সেই প্রেক্ষাপটেই কলকাতা হত্যাযজ্ঞের আয়োজন, যাতে হিন্দুরা নিশ্চিহ্ন হয়।

হোসেন শহীদ সুরাবর্দি ১৯৪৬ সালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (মুসলিম লীগ)। সমসাময়িক নানা বিবরণে জানা যায়, তিনি মুসলিম দাঙ্গাকারীদের আড়ালই শুধু দেননি, প্রকাশ্যে আশ্বাসও দিয়েছিলেন যে, শহরে তারা যদি সশস্ত্র হয়ে হিংসা চালায়, তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এই নীরব প্রশ্রয়ই ১৯৪৬ সালের সেই দাঙ্গাকে আরও ভয়ংকর করে তোলে, যেখানে কলকাতার হিন্দুদের রক্ষায় সাধারণ মানুষকেই অস্ত্র হাতে দাঁড়াতে হয়েছিল।
কিন্তু গোপালচন্দ্র মুখোপাধ্যায় দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন প্রতিরোধের অগ্রভাগে। তাঁর সেই দিনগুলির লড়াই প্রমাণ করেছে, প্রশাসন যখন ব্যর্থ হয়, তখন সাধারণ মানুষও ইতিহাস বদলে দিতে পারে। কলকাতার হিন্দু সমাজ আজও তাঁকে স্মরণ করে হিন্দুরক্ষক “গোপাল পাঁঠা” হিসেবে, যিনি রক্তাক্ত অগাস্টে অসংখ্য প্রাণ বাঁচিয়ে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।
সুরাবর্দির রাজনৈতিক জীবন ছিল বহুমাত্রিক। ১৯২৪ সালে তিনি কলকাতা কর্পোরেশনের ডেপুটি মেয়র হন। এরপর ১৯৩৭ সালের নির্বাচনোত্তর ফজলুল হকের কোয়ালিশন মন্ত্রিসভায় শ্রম ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত খাজা নাজিমুদ্দিন মন্ত্রিসভায় ছিলেন বেসামরিক সরবরাহ মন্ত্রী। অবশেষে ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্রিটিশ শাসনের অন্তিম মুহূর্তে সুরাবর্দির বড় স্বপ্ন ছিল “বৃহৎ বাংলা” গঠন করা। এই রাষ্ট্রের আওতায় পড়ত পুরো বাংলা, আসাম, বিহারের মানভূম ও সিংভূম অঞ্চল, এমনকি সম্ভাব্যভাবে পূর্ণিয়া জেলা পর্যন্ত। তাঁর আশা ছিল, পূর্বভারতে এই বৃহৎ বাংলা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক সত্তা হয়ে উঠবে।
১৯৪৬ সালে প্রকাশিত কমিউনিস্ট পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে তারা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিল যে, তাদের অবস্থান হলো একটি “ঐক্যবদ্ধ ও স্বাধীন বাংলা” গঠনের পক্ষে। তাদের বক্তব্য ছিল, একটি স্বাধীন ভারতের ভেতরে বাংলার মুসলমান ও হিন্দু উভয়ের জন্য সমান স্বদেশ হবে বাংলা, আর সেই বাংলা নিজস্ব অধিকার প্রয়োগ করবে প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে গঠিত একটি সার্বভৌম গণপরিষদের মাধ্যমে। সেই গণপরিষদই সিদ্ধান্ত নেবে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে বাংলার সম্পর্ক কেমন হবে।
অর্থাৎ, কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া তখন কার্যত মুসলিম লীগের “বৃহৎ বাংলা” পরিকল্পনার সঙ্গেই সুর মিলিয়েছিল। একদিকে মুসলিম লীগ চাইছিল অবিভক্ত বাংলাকে পাকিস্তানের অংশ করতে, আর অন্যদিকে কমিউনিস্ট পার্টি দাবি করছিল “স্বাধীন বাংলা”—যা ভারত থেকে আলাদা থেকেও এক ধরনের সার্বভৌম রাষ্ট্র হয়ে উঠতে পারত। ফলত, হিন্দু সমাজে এই ধারণা প্রবল হয় যে, কংগ্রেসের “অহিংসা”, মুসলিম লীগের “পাকিস্তান” এবং কমিউনিস্টদের “স্বাধীন বাংলা”—এই তিনটি রাজনৈতিক ধারা মিলে তাদের অস্তিত্বই সংকটে ফেলতে চলেছে। কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টি আর সুরাবর্দির সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি, কারণ কলকাতার দাঙ্গা এবং হিন্দু প্রতিরোধ সেই পরিকল্পনার ভিতকেই নড়বড়ে করে দিয়েছিল।
